লিবিয়ায় গণকবরে মিলল ৬৫ অভিবাসীর মরদেহ

অনলাইন ডেস্ক : উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার একটি গণকবরে অন্তত ৬৫ জন অভিবাসীর মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মৃত এসব অভিবাসীরা ঠিক কোন দেশের নাগরিক তা জানা যায়নি।

এছাড়া কোন পরিস্থিতিতে তাদের মৃত্যু হয়েছে সেটিও এখনও অজানা। শুক্রবার (২২ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লিবিয়ায় অন্তত ৬৫ অভিবাসীর মৃতদেহ সম্বলিত একটি গণকবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)।

আইওএম বলেছে, ঠিক কোন পরিস্থিতিতে এসব অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের জাতীয়তা কী তা এখনও অজানা। তবে তাদের বিশ্বাস, মরুভূমির মধ্য দিয়ে ভূমধ্যসাগরের দিকে পাচার হওয়ার সময় এসব অভিবাসী মারা গেছেন।

জাতিসংঘের অংশ এই সংস্থাটি বলেছে, অভিবাসীদের গণকবর আবিষ্কারের ঘটনায় তারা ‘গভীরভাবে হতবাক’ হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ   স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে অস্ত্র সমর্পণ করবে হামাস

এই ঘটনায় লিবিয়া তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে আইওএম। আর ওই গণকবরটি দক্ষিণ-পশ্চিম লিবিয়ায় পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

আইওএম-এর একজন মুখপাত্র বলেছেন: ‘অভিবাসীদের নিখোঁজ বা প্রাণহানির প্রতিটি প্রতিবেদন এক-একটি শোকার্ত পরিবারকে প্রতিনিধিত্ব করে, যারা তাদের প্রিয়জনদের সম্পর্কে উত্তর খুঁজছেন বা বিপর্যয়কর অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান এই মৃত্যু এবং অভিবাসীরা যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছেন তাতে এটা স্পষ্ট যে, এটি অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের কারণেই হচ্ছে।’

সংস্থাটি বলেছে, সর্বশেষ এই ট্র্যাজেডিটি অভিবাসীদের চোরাচালান এবং বৈধ অভিবাসন জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।

বিবিসি বলছে, লিবিয়ার উপকূল থেকে যাত্রা শুরু করা কমপক্ষে ৬০ জন অভিবাসী রাবারের ডিঙ্গি নৌকায় ভূমধ্যসাগরে পাড়ি দেওয়ার সময় মারা যাওয়ার পরে গণকবর আবিষ্কারের এই বিষয়টি সামনে এলো।

এর আগে আইওএম এই মাসের শুরুতে বলেছিল, এক দশক আগে রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২৩ সালটি ছিল অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক বছর। এই বছর বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অভিবাসন রুটে কমপক্ষে ৮ হাজার ৫৬৫ জন মারা গেছে।

আরও পড়ুনঃ   ইরানে ইসরায়েলি হামলা,লাফিয়ে বাড়ল তেল ও স্বর্ণের দাম

আর এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে সামরিক জোট ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর থেকে লিবিয়ার দীর্ঘদিনের নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুত ও হত্যা করা হয়। আর এরপর থেকেই আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অংশে যুদ্ধ এবং দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা লোকদের অভিবাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে লিবিয়া।

মূলত উন্নত জীবনের আশায় মরুভূমি এবং ভূমধ্যসাগর জুড়ে বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করে অভিবাসীরা। কিন্তু সাহারা মরুভূমিসহ বিপজ্জনক এই রুট পাড়ি দিতে গিয়ে অনেকেই মারা যায়।