বগুড়ায় বেগুনের কেজি ২ টাকা, তবুও মিলছে না ক্রেতা

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ার শিবগঞ্জে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে বেগুনের দাম। মাত্র ২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। দাম এত কম হলেও বাজারে মিলছে না ক্রেতা। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা। এদিকে পাইকারি বাজারে ২ টাকায় বিক্রি হওয়া বেগুন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে।

আজ বুধবার (২০ মার্চ) উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় সবজির বাজার মহাস্থান হাট ও মোকামতলা খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

দুই সপ্তাহ আগে মহাস্থান হাটে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

আজ বুধবার সকালে মহাস্থান হাটে গেলে দেখা যায় বেগুনের আমদানি তুলনা মূলক কম। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্য বেগুন নিয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে প্রান্তিক পর্যায়ের বেগুন চাষিদের। এ সময় কথা হয় শিবগঞ্জ থেকে সবজি কিনতে আসা হারুন অর রশিদের সঙ্গে। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৃষ্টি হওয়ায় বাজারে আমদানি খুব কম। দামও অস্বাভাবিক ভাবে কমে গেছে।’

আরও পড়ুনঃ   রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের ৬৩ তম ব্যাচের প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ

মঙ্গলবার আবহাওয়া ভালো ছিল। আমদানিও বেশি ছিল। তারপরেও ৮০ টাকা মন বেগুন কিনেছি। আজও ১ মণ বেগুন কিনেছি ৮০ টাকায়।

একই হাটে বেগুন বিক্রি করতে এসেছেন শিবগঞ্জের গুজিয়া এলাকার বেগুন চাষি আলি আজগর। তিনি বলেন, ২ মণ বেগুন বিক্রি করতে এসেছি। ক্রেতাই নাই। বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি ১ ঘণ্টা যাবৎ। একমন বেগুন বিক্রি করেছি ৮০ টাকায়। বাকি এক মণ বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছি।

এ সময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বেগুন বিক্রির টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়াই হবে না। এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে বেগুন চাষ করেছি। দাম এত কম থাকলে ১৬ আনাই মাটি হয়ে যাবে।

বেগুন চাষি সাজু মিয়া বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত সব মিলে ২ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। দাম কম হওয়ায় খেতেই অনেক বেগুন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবজি সংরক্ষণের হিমাগার থাকলে এমন লোকসানে পড়তে হতো না!’

আরও পড়ুনঃ   স্বর্ণের খোঁজে মাটি খুঁড়তে থাকা সেই ইট ভাটায় ১৪৪ ধারা জারি

মহাস্থান হাটের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী রেজাউল করিম বেলন, ‘এবার বেগুনের ফলন ভালো হওয়ায় আমদানি বেড়েছে। সে কারনেই দাম কম। আমি ঢাকার কারওয়ান বাজার, সিলেট, গাজীপুর এলাকায় সবজি পাঠাই। গাড়ি ভাড়া বেড়েছে। শ্রমিক খরচ বেড়েছে। সব কিছুর দাম বেশি হওয়ায় আমরাও খুব বেশি লাভ করতে পারছি না।’

এদিকে মহাস্থান সবজি বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে মোকামতলা বাজারে বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি দরে। ২ টাকা কেজি বেগুন কিনে ৩০ টাকা কেজি কেনো বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন নি বিক্রিতারা।

আজ বুধবার মহাস্থান হাটে বিভিন্ন সবজির মধ্য করলা ৬০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, টমেটো ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মুজাহিদ সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলায় এবার ১৩০ হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলনও হয়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি বেগুন ওঠায় চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’